শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে অ্যাড. মতিয়ার রহমান-এঁর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট শহরের বিভিন্ন রাস্তায় রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী; দুর্ভোগে শহরবাসী! লালমনিরহাটে কচুর আবাদ বেড়েছে রেলপথ সংস্কারে অনিয়ম; তদন্তে দুদক! বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন মোছাঃ লতিফা বেগম! লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ব্যস্ত প্রচারণায়! লালমনিরহাট সদর উপজেলা ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৪ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে চাষিরা চাল কুমড়া চাষে ঝুঁকে পড়েছেন লালমনিরহাটে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকঃ) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত বিশ্ব মা দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সংসারেই বৈরাগ্য, সব হারিয়ে ঘোড়ায় চরে ভিক্ষা করেন বাচ্চা মিয়া

সংসারেই বৈরাগ্য, সব হারিয়ে ঘোড়ায় চরে ভিক্ষা করেন বাচ্চা মিয়া

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: সেই সব ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই দেখা যায় ঘোড়ায় চরা ভিক্ষুক। একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় উপমহাদেশে ঘোড়ায় চরা ভিক্ষুকদের দেখা মিলতো। আবার সমাজে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি দেউলিয়াত্ব, সন্যাস-বৈরাগ্য গ্রহণ করলে তাকে একটি ঘোড়া দেয়া হত। সেই ঘোড়ায় চরে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে দৈনন্দিন সদাই সংগ্রহ করতো সর্বহারা-দেউলিয়া ব্যক্তিটি। এখন এগুলো লোককথা, ইতিহাসের পাতায় পাতায় থাকার কথা। কিন্তু এই চরম আধুনিক শতাব্দীকালে নিদারুণ দুঃখ-কষ্টের সাথে সব হারানো নিঃসঙ্গ বাচ্চা মিয়া যেন ইতিহাসের ঐতিহ্যই রক্ষা করে চলেছেন!

 

লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ের নামুড়ী বাজার এলাকার বাচ্চা মিয়া। বয়স আনুমানিক ৭০ থেকে ৭৫। সংসারে ছিল এক ছেলে দুই মেয়েসহ পাঁচজনের। এক এক করে দুই মেয়ের বিয়ে দেন। ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে ভিটেমাটি টুকুও বেচতে হয়। এক মাত্র ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় থাকে। কাজ করে রড মিস্ত্রীর। বাচ্চা মিয়া আর তার স্ত্রী আছিয়া বেগম ছোট মেয়ে আলেয়ার করে দেয়া ঘরে থাকেন। ঘরটি বলা চলে রাস্তার ওপরেই।

 

এই বয়সে বাচ্চা মিয়ার শক্তসামর্থ কাজের শরীরটি আর নেই। বেশ কয়েক বছর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলেন। চলতে পারেন না ঠিক মত। মাত্র ২৫০০টাকা দিয়ে গঙ্গাচড়রার মহিপুর ব্রিজের পাশ থেকে কিনে আনেন ঘোড়া। ঘোড়াটির পিছনের পা আর কোমড় ভাঙা ছিল। পশু চিকিৎসক আর টোটকা চিকিৎসা করে ঘোড়াটিকে চলনসই করেছেন।তারপরও ঘোড়াটি পিঠে অন্য কেউ চরলে ঘোড়াটি বসে পরে। ভাড় সহ্য করতে পারে না।

 

ঘোড়াটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাচ্চা মিয়াকে নিয়ে চলেন দূর-দূরান্তে। শিয়ালখাওয়া, কাকিনা, সুকানদীঘী। ঘোড়া আর বাচ্চা মিয়া কাক ডাকা ঘোরে বেরিয়ে পড়েন। ১০ কেজি, ১২ কেজি চাল নিয়ে বাড়ি ফেরেন এশার আজানের সময়। অনেকগুলো গৃহস্থবাড়ি ঘুড়তে হয়। টাকা পয়সা ভিক্ষা করেন না। যদি কেউ দেয়, তবেই নেন। ঘড়ি নেই, সময়ও নেই। কাক ডাকা ভোর আর এশার আজানই যেন জীবনের মাফকাঠি।

 

একমাত্র সহায় সম্বল ঘোড়াটিকে নামুড়ী স্কুল মাঠে ছেড়ে দিয়ে ঘাস খাওয়াতেন। ফসল নষ্টের অযুহাতে স্থানীয়রা স্কুল মাঠে ঘোড়াটিকে চরাতে দেন না। এখন ৭০টাকা দিয়ে পাঁচ কেজি কুঁড়া, রেডিফিড, ভুসিসহ ঘোড়ার পিছনেই ব্যায় হয় ১২০ থেকে ২০০টাকা।

 

এতকিছুর পরও অনেক খুশি বাচ্চা মিয়া। বাচ্চা মিয়ার স্ত্রী আছিয়া বেগম আর বড় মেয়ে হালিমার সাথে কথা হয়। তারা কারো কাছেই তেমন কিছু আশা করেন না। বরং তারা এতটাই অতিথি পরায়ন, যে কেউ তাদের বাড়ি গেলে পান সুপারি খাইয়ে বিদায়ের চেষ্টা করেন! তারা বলেন, যতক্ষণে কোনো কিছু হাতোৎ পড়ে নাই, ততক্ষণে কি নিজের হইবে? (যতক্ষণ কোন কিছু নিজের হাতে আসে নাই, ততক্ষণ সেটা নিজের হবেনা)।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone